how to make kuler achar bengali pickle recipe সারা বছরের কুলের আচার

how to make kuler achar jujube pickle Bengali recipe

কুলের আচার বানিয়ে রাখুন সারা বছর খেতে পারবেন

সরস্বতী পুজোর আগে কুল খাওয়ার একটা নিষিদ্ধ টান থাকে । বাজারে প্রচুর কুল ওঠে ঠিক ওই সময় । সাবেকি গোটা সেদ্ধ আর কুলের চাটনি খাবার সবার ইচ্ছে হয় । আর সারাবছরের কুলের আচার বানানোর উপযুক্ত কুল খুঁজে খুঁজে বাড়িতে আনাটাও যেন এক পবিত্র কর্তব্যের মধ্যে পরে । বাজারের কুলের আচারে সেই স্বাদ তো পাওয়াই যায় না বরং খারাপ লাগাটা বাড়িয়ে দেয় । নিজের জন্যে হয়তো এই সহজে সব পেয়েছির যুগে আচার না বানানোর বিকল্প খুঁজে নিলেও বাড়িতে ছোট কেউ থাকলেই এই নিজে বানানোর আয়োজন সানন্দে করে ফেলা যায় । শীতের শেষে এই পাকা টোপা কুল বাজারে পাবেন । কুলের আচার বানিয়ে রাখুন সারা বছর খেতে পারবেন । এইরকম আরো বাঙালি প্রিয় খাবারের গল্প আর কথা পড়তে পারেন এইখানে



ছোটবেলা থেকেই খাবারের প্রতি আমার ঝোঁক ছিল। অ্যাটলাস সম্পর্কে আমার জ্ঞান উপাদান, মশলা, রান্নার কৌশল ইত্যাদি সম্পর্কিত এবং সবকিছুই খাদ্য-কেন্দ্রিক। আমি মানুষকে জানি তারা কী খায়, কীভাবে খায় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে তারা কী খেতে পছন্দ করে। আশ্চর্যের বিষয়, দেখতে পাচ্ছি আজ আমার পড়ার অভ্যাসও বেড়ে চলেছে শুধুমাত্র খাবারের দিকে|

যাইহোক, আমার শৈশবের দিনগুলি মনে আছে যখন আমাদের কাছে ডিজিটাল বন্ধু ছিল না, আমরা আমাদের অবসর সময় কাটাতাম বিভিন্ন ইনডোর এবং আউটডোর গেম খেলে এবং লাইব্রেরি থেকে মনভালো করা বই পড়ে পড়ে । বার্ষিক পরীক্ষার পর আমাদের সেরা ছুটি ছিল শীতকালে। আমি মুখভর্তি করে আচার খেতাম দুপুর বেলা গল্পের বই পড়তে পড়তে আর আমার মা সেই সময়ে আমার জন্য মনে করে তৈরি করতেন এবং আমিও পরিবারের বাচ্চাদের জন্য অনেক করেছি । এই কুলের আচারের অমোঘ আকর্ষণ ছিল সব ছোটদের । কুলের আচার দিয়ে বন্ধুত্ব তৈরী করা যেত, অভিমান ভাঙ্গানো যেত । স্কুলের বাইরে আচারওয়ালা এখনো দেখতে পাওয়া যায় তাই এখনো যে আচার ছোটদের প্রিয় সেটা বোঝাই যায় । আমরা শুধু ঘরে বানানো বন্ধ করেছি, ছোটরা খাওয়া বন্ধ করেনি ।

কুলের আচার এবং TUTTI-FRUTTI - KUL CANDYটি" আমার মায়ের থেকে শেখা । এই ফলটি সারা বছরের জন্য সংরক্ষণ করার জন্য তিনি তার এক বন্ধুর কাছ থেকে এই সুস্বাদু রেসিপিগুলি শিখেছিলেন, কিছু ঘরোয়া প্রতিকারের জন্য খুব দরকারী। দেখতে গেলে খুব বেসিক আচার রেসিপি । বাংলার সব ঘরে ঘরে এই একই ভাবে কুল সংরক্ষণ করা হয় ।

প্রথাগতভাবে ভারতে ফল রোদে শুকানো হয় এবং বীজ সরিয়ে ফেলা হয়। বীজগুলো ফেলা হয় না - শুকনো বীজ গুঁড়ো করে যাদের হাইপারগ্লাইসেমিয়া আছে তারা ঘরোয়া টোটকা হিসাবে ব্যবহার করেন । তারপর তেঁতুল, লাল লঙ্কা, লবণ এবং গুড় দিয়ে কুলের খোসা ও শাঁস থেঁতো করা হয়। চীন এবং কোরিয়াতে, জুজুব ফল মিষ্টি চায়ের শরবত কাচের বয়ামে পাওয়া যায় এবং টিব্যাগ আকারে টিনজাত জুজুব চা পাওয়া যায়, যদিও ব্যাপকভাবে পাওয়া যায় না। জুজুব ওয়াইন, জুস এবং ভিনেগার ও হয়।

ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের গ্রন্থাবলীতে "হেমন্তে বিবিধ খাদ্য" কবিতায় এই বাঙালির প্রিয় কুল নিয়ে এক দীর্ঘ বর্ণনা আছে । তার থেকে চার লাইন নেওয়া -

বৃক্ষের উপরে হেরে নানা কুল কুল।

লোভাকুল হয়ে মন নাহি পায় কুল ॥

পাকালোভী পাকা খায় কাঁচা খায় কাঁচা ।

কুলেতে অকুল লোভ বীচি নাই বাছা ॥

(150 reviews)

Jujuba Pickle কুলের আচার

কুলের আচার গরমের দিনে পোখাল বা পান্তা ভাতের সাথে সবচেয়ে ভালো লাগে খেতে ।

একটি আচার, আপনি যদি বেশি দিন সংরক্ষণ করতে চান তবে আপনাকে এর দুটি বয়াম তৈরি করতে হবে। একটি বড় জার সংরক্ষণের জন্য এবং একটি ছোট জার নিয়মিত খাওয়ার জন্য। বড় জার থেকে নিয়মিত ব্যবহারের জন্য একটি ছোট অংশ নিয়ে ছোট যার এ রাখবেন । আর এই নেবার সময় আর্দ্রতা এড়াতে সর্বদা একটি শুকনো চামচ ব্যবহার করা দরকার এবং বড় জারটিকে বাকি সবার নাগালের বাইরে রাখুন। তাহলেই দেখবেন আপনার বানানো আচার অনেক দিন ছাতা না পরে নষ্ট না হয়ে ঠিকমতো খেতে পারছেন ।

অনেকটা বানাতে পারলে বর্ষার শেষেও যদি থাকে, বর্ষার পরে বিশেষভাবে বড় পাত্রটি আবার রোদে দেবেন কয়েকবার । [যেমন বাঙালিরা ভাদ্র মাসে [শরতের আগে] রোদে রাখেন । এই সময় একটি টিস্যু বা মসলিন কাপড় দিয়ে বয়ামের মুখ ঢেকে রোদে রাখুন যাতে পোকা বা ধুলো ময়লা না পরে । তারপর জারটি সম্পূর্ণ ঠান্ডা না হওয়া পর্যন্ত একপাশে রাখুন, একদিনের জন্য । তারপর ঢাকনা ঢেকে রাখুন এবং অন্ধকার জায়গায় সরিয়ে রাখুন। পুরো ঠান্ডা না হলে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখলে ঘেমে গিয়েও আচার নষ্ট হয়, ফাংগাস হয়ে যেতে চায় ।

এই রেসিপিটি রেডি-টু-সার্ভ আচার তৈরির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। নিখুঁত স্বাদের জন্য "রাজ বদর" বা মিষ্টি এবং শাঁস আছে এমন টোপা কুল লাগবে।

রান্নার উপকরণ:

  • টোপা কুল বা রাজ বদর, ১ কিলো,
  • গুড়, ৫০০ গ্রাম,
  • তেতুলের ক্বাথ, ১00 গ্রাম,
  • ৮ - ১০ টা গোটা লাল শুকনো লঙ্কা,
  • কালো আর সাদা সর্ষে ১০ গ্রাম, 1:1 ,
  • লবন, তিন ধাপে মিশাতে হবে,
  • হলুদ আর সর্ষের তেল, ২ চামচ

রান্নার পদ্ধতি:

  1. সম্পূর্ণ ভালভাবে পাকা ফলগুলি পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিয়ে একটি কাঁটাচামচ দিয়ে ফুটো করে নিতে হবে প্রতিটা । এই সময় ফলের সাথে অল্প লবণ, হলুদ এবং সরিষার তেল মাখিয়ে নিতে হবে । তারপরে ফলের গায়ের জল জল ভাবটা ভালোভাবে রোদে শুকানো দরকার ।
  2. একদিন চড়া রোদে শুকালেই এর সাথে তেতুলের রস, হলুদ আর লবন দিতে হবে ।
  3. শুকনো প্যানে সর্ষে আর লাল লঙ্কা লবণ দিয়ে ভালো করে ভেজে নিয়ে গুঁড়া করে নিন. কুলের সঙ্গে মাখিয়ে রাখুন ।
  4. একটি ভারী প্যানে গুড় ফুটাতে দিন। এটি পাতলা করার জন্য পর্যাপ্ত জল দিন, একটু ফুটিয়ে আগুন নিভিয়ে দিন।
  5. চামচ দিয়ে গুড়ের উপর ভেসে ওঠা ময়লা তুলে ফেলে দিতে হবে । এর পর স্ট্রেইনারের মধ্য দিয়ে ছেঁকে নিন । গুড়ের সব ময়লা ফেলে দিতে হবে ।
  6. এবার আবার পরিষ্কার কড়াইতে গুড় নিয়ে আগুনে জ্বাল দিন, আঁচ কম রাখুন.
  7. কিছুক্ষণ পরে গুড় যথেষ্ট ঘন বাদামী সিরাপ তৈরি হলে আগুন নিভিয়ে দিন। এর পরেই শুকনো করা মশলা মাখানো টোপা কুল দিয়ে দিন এবং ভালো করে মেশান।
  8. ঠান্ডা হওয়ার আগে একটি পরিষ্কার কাচের পাত্রে রাখুন। ঠান্ডা করার জন্য ঢাকনা খুলে রাখুন।
  9. একটি পরিষ্কার মসলিন কাপড় দিয়ে বয়াম ঢেকে ৩ থেকে ৪ দিন সম্পূর্ণ ঠান্ডা হবার জন্যে সরিয়ে রাখুন । কাপড় দিয়ে ঢাকার কারণ যাতে ঢাকনায় গরমে বাস্প তৈরী করে আচার ঘেমে না যায় । তখন খুব তাড়াতাড়ি আচার নষ্ট হয়ে যাবে ।
  10. তৈরি হয়ে গেলো বাঙালি প্রিয় কুলের আচার।

ভারতে, সিল্কওয়ার্ম পালনের জন্য প্রাথমিক হোস্ট প্লান্টগুলির মধ্যে এই কুল গাছ অন্যতম, লাক্ষা পোকার জন্য একটি হোস্ট প্ল্যান্ট হিসাবে ব্যবহার হয়। বার্মায়, ফলটি রেশম রং করার কাজে ব্যবহৃত হয়। ভুটানে, কুল গাছের পাতা ঘরে পোকামাকড় তাড়াতে আর রুম ফ্রেশনার হিসাবেও ব্যবহার করতো ।

"টুলের উপর উঠে কুলের আচার চুরি করে খেতাম। তিলের নাড়ুর ভাড় শিকেয় তোলা থাকত, চুরি করতে পারতাম না বলে কাকীমা সে ভীড়টা কুলুঙ্গিতে নামিয়ে রাখতেন-__মোড়ায় চড়ে পেড়ে খেতাম । কাকীমা পৌষ মাসে পিঠে তৈরি করে, ভাদ্র মাসে তালের বড়া ভেজে, দোঁলের দিনে ফুটকলাই ছাঁচ কিনে, রথের দিনে পাঁপর ভেজে আমাদের দুই ভাইবোনকে খাওয়াতেন। কোন দিন পায়েস বা খিচুড়ি রাধলেও ডেকে পাঠাতেন। ভাইদ্বিতীয়ার দিন দাদার কপালে ফৌটা দিতে গিয়েও তোমার কথা মনে পড়ে। বৌদিদি যখন নতুন বৌ, তখন সারাদিনের সঙ্গিনী ছিলাম আমি। মালতী দিদির সঙ্গে গায়ের বনে বনে বৈঁচি বনকুল খেয়ে 'বেড়াতাম__সে মালতী দিদি আজ নেই। যশোদা বৈষ্ণবীর শিউলি গাছটা কি এখনো আছে? তা বোধ হয় তুমিও জানো না। মালতীদের পুকুরের ধারে সেই বকুল গাছটা ? কুল আর শিউলি কুড়িয়ে নিলেই চলত। এই দুই ফুলে আমাদের খেলাপাতির ঠাকুর-পুজা হত। কত কথা মনে পড়ছে। রঙ্গ-চিত্র শ্রীকালিদাস রায়"

সুশ্রত সংহিতার সমীক্ষায় বলা হয়েছে কুল ও বদর কাঁচা থাকলে কফ ও পিত্ত বৃদ্ধি করে; কিন্তু পাকা হলে পিত্ত ও বায়ু নষ্ট করে । এ ছাড়া বদরের দ্বারা সৌবীর নাম এক ধরনের কাঁজি তৈরী করে খাওয়ানো হতো, বিভিন্ন রোগ ব্যাধি দূর করার জন্যে । চক্রদত্তে ব্যবহৃত লোকায়তিক ব্যবহারের কিছু উল্লেখযোগ্য উদহারণ পাওয়া যায় । উত্তর ভারতের ইউনানি চিকিৎসাশাস্ত্রে ব্যবহৃত উনাও বা উনাব বলে যেটি, তার আকার অবিকল কুলের মত। তার বর্তমানের বোটানিকাল নাম Zizyphus sativa Geartn., পূর্বে এটির নাম ছিল Zizyphus Vulgaris, তারপর বদর বলে বর্তমানে যেটি প্রচলিত তার বোটানিকাল নাম Zizyphus jujuba Lam. আর একটি প্রজাতির খুব ছোট কুল গাছ দেখা যায়, তাকে বলা হয় ভূবদরী। এটির বোটানিকাল নাম Zizyphus nummularia W&A. আরও একটি প্রজাতি আমাদের বাংলায় মেদিনীপরে অঞ্চলের বিলের পতিত জমিতে হয়ে থাকে, সেটাও ভূলণ্ঠিত বলা চলে। এটির নাম Zizyphus minima. এরা সকলেই Rhamnaceae ফ্যামিলিভুক্ত। কৌটিল্য, পাণিনি এবং পতঞ্জলির মতো পণ্ডিতদের লেখা যজুর্বেদ, সূত্র, মহাকাব্য এবং চিকিৎসা গ্রন্থ এবং অন্যান্য সাহিত্যে অনেক উল্লেখ হয়েছে।

ঔষধার্থে ব্যবহার হয়—ফল, বীজ, মূল ও গাছের ছাল ও পাতা ৷ যেখানে কুলের আভ্যন্তরিক ব্যবহার (Internal use) করার কথা বলা আছে সব পাকা (শুকনো) কুল প্রয়োগ করার বিধি লেখা । যেমন আমাশয় ১০ থেকে ১৫ গ্রাম শুকনো কুল তিন কাপ জলে সিদ্ধ ক'রে এক কাপ থাকতে নামিয়ে, ছে'কে খেতে দিলে উপকার যে হবে না তা নয়, তবে এর সঙ্গে একটু, সাদা দই মিশিয়ে খেলে ভাল ফল হয়, আর যদি সে সময়ে দালিম (দাড়িম্ব Punica granatum) সঙ্গে ২/১ চা-চামচ রস মিশিয়ে খেলে আর কথা নেই; এটাতে উপকার হবেই; তবে একটা কথা, সব সময়ে তো দালিম পাওয়া যায় না, তাই দালিমের খোসা ঐ কুল সিদ্ধ করার সময় ৫ গ্রাম আন্দাজ মিলিয়ে সিদ্ধ করলেও উপকার হবে। অনেক রোগ নিরাময়ের জন্যে কুল ব্যবহার হতো । তার থেকে কয়েকটা উল্লেখ করা হলো ।

খুব রোগা :— সারাদিন খাই খাই অথচ গায়ে মাংস লাগে না। প্রাচীনদের সমীক্ষা হলো—এই লোকের পেটে (অন্ত্রে) বড় ক্রিমি আছে, তাই এদের এই দুর্দশা। এইসব লোকের ক্ষেত্রে কাঁচা মিষ্টি কুলের শাঁস অন্ততঃ ১০ গ্রাম ৩ কাপ জলে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেকে ঐ পিচ্ছিল ক্বাথটি প্রত্যহ একবার করে খেতে দিলে এদের পেট পরিষ্কার হবে এবং ঐ অত্যধিক ক্ষিধেটাও প্রশমিত হবে, তবে এর কিমি যাতে বেরিয়ে যায় তার ব্যবস্থা করাটাই সমীচীন। এর দ্বারা তাঁর শরীরটা তাড়াতাড়ি ভাল হ'য়ে যাবে।

কোষ্ঠবদ্ধতা :— বড় এমন এক অসুখ যা অনেক অসুখ ডেকে আনে । এক্ষেত্রে মিষ্টি পাকা কুলকে চটকে, খোসা ও বীজগুলো বাদ দিয়ে অথবা ছেকে, তার সঙ্গে অল্প জল মিশিয়ে ছেকে, কয়েকদিন খেতে হয়। এটাতে ঐ কোষ্ঠবদ্ধতা সেরে যায়। প্রশ্ন, তখন যদি কাঁচা কুলের সময় না হয়? তা হলে শুকনো কুল ১৫ গ্রাম আন্দাজ নিয়ে ৩/৪ কাপ জলে সিদ্ধ ক'রে এক কাপ থাকতে নামিয়ে খোসা-বীজ বাদ দিয়ে, অল্প লবণ বা চিনি মিশিয়ে খেলেও হবে, তবে সেটা অনুকল্প‍ই হলো ৷

বসন্ত রোগে :— দুই-একটা বেরিয়েছে, আর বেরচ্ছে না এবং যেটা বেরিয়েছে সেটা পাকেও না, যেন দরকচা হ'য়ে আছে। এক্ষেত্রে বীজ বাদ দিয়ে শুকনো কুলকে গুঁড়ো করে সেই গুঁড়োর অন্ততঃ ৪/৫ গ্রাম অল্প গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে একটু একটু করে চেটে চেটে খেতে দিতে হবে। সমস্ত দিনে অন্ততঃ ৫/৭ গ্রাম খাওয়ানো চাই (এটা পূর্ণবয়স্কের মাত্রা)। এর দ্বারা বসন্তের ঐ গুটিগুলি ঝেড়ে বেরিয়ে যাবে এবং তাড়াতাড়ি পেকে যাবে। তারপর যথারীতি তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে । এখন এর সাথে বসন্ত কালে সরস্বতী পুজোর আগে কাঁচা থাকে বলে কুল না খাবার স্বাস্থ্যগত কারণ আছে কিনা বিচার্য ।

মেদ রোগে :— যাঁদের পেট ও পিছন ভেরে যাচ্ছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কুলের কাঁচা পাতা ৫ গ্রাম করে নিয়ে বেটে সরবত করে খেতে হবে, তবে চিনি বা মিছরি না মিশিয়ে। এ রোগের ক্ষেত্রে দু'বেলা ভাত খাওয়া নিষেধ — (খেতে হবে একবেলা রুটি আর একবেলা ভাত, তাও কড়া সেকা রুটি) আর চিনি বা যে কোন মিষ্টি ও আলুও একে বাড়ে কম করে খাওয়া । এই পাতাবাটা দু'বেলা খেলেই ভাল হয়। এর দ্বারা ঐ দুটোই ঝরে যাবে।

এই সব উপদেশ একাদশ শতকের চক্রপাণি দত্তের লেখা চক্রদত্ত গ্রন্থের দৃষ্টফল এবং Chironjib Bonoushodhi part 2 by Shivkali Bhattacharya থেকে সংগ্রহীত

CHEMICAL COMPOSITION

(a) Potassium oxalate. (b) Essential oil. (c) Fatty alcohol.

Some recent research of Jujube collected here from Medicinal Plants of South Asia: Novel Sources for Drug Discovery

কুল হল বেদনানাশক, অ্যানোডিন, অ্যান্টিক্যান্সার, রক্ত বিশুদ্ধকারী, কার্ডিওটোনিক, ডিমুলসেন্ট, হজমকারী, মূত্রবর্ধক, ইমোলিয়েন্ট, এক্সপেক্টোর্যান্ট, হেপাটোপ্রোটেকটিভ, হিপনোটিক, হাইপোটেনসিভ, ইমিউন টনিক, সজীব, হালকা রেচক, পুষ্টিকর, পেক্টোরাল, রিভেনজেটিভ, রিভেনজিটিভ টনিক, পেটিক এবং একটি টনিক। এটি ইমিউন-সিস্টেম প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া কমায়। শরীর যখন দুর্বল অবস্থায় থাকে স্ট্যামিনা পুনর্নির্মাণ করতেও এটি ব্যবহার করা হয়। এটি ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে এবং পেশী শক্তি উন্নত করতে একটি পুষ্টি হিসাবেও ব্যবহৃত হয়। এটি লিভারের কার্যকারিতা শক্তিশালী করার জন্য টনিক হিসাবেও নির্ধারিত হয়। মৌখিকভাবে নেওয়া, জুজুব ফলটি কর্কশতা, কণ্ঠস্বর হ্রাস, প্রদাহজনক গলা সংক্রমণ, কাশি এবং ব্রঙ্কাইটিস উপশম করতে ব্যবহৃত হয়। বেরিগুলি অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিগুলির জন্য দুর্দান্ত কাজ দেয়। এগুলি হৃৎপিণ্ডকে টোনাফাই করতে, মনকে শান্ত করতে, পাকস্থলী এবং প্লীহাকে শক্তিশালী করতে, শারীরিক ক্রিয়াকলাপকে স্বাভাবিক করতে, শরীরের তরল নিঃসরণ বাড়াতে, রক্তকে পুষ্ট করতে এবং বর্ণের উন্নতি করতে সহায়তা করে।